ঢাকা : এক দশক পর সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতনকাঠামো নির্ধারণে জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করা হয়েছে।
এই কমিশন জাতীয় বেতন স্কেলের আওতাভুক্ত সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মঞ্জুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পর্যালোচনা করে সুপারিশ করবে।
কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক অর্থসচিব ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান জানিয়েছেন, নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
রোববার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় জাতীয় বেতন কমিশনের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
জাকির আহমেদ খান বলেন, গত এক দশকে মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি বেড়েছে, কিন্তু সে অনুপাতে বেতন বাড়েনি। তাই সময়োপযোগী বেতন কাঠামো নির্ধারণই এখন প্রধান কাজ। কমিশন বিশেষায়িত চাকরির জন্য পৃথক বেতন কাঠামো প্রস্তাব, আয়কর পরিশোধ বিবেচনায় বেতন নির্ধারণ, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতার যৌক্তিকীকরণ, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে বেতন সমন্বয়ের পদ্ধতি নির্ধারণ, সময়োপযোগী পেনশন ও অবসর-সুবিধা নিশ্চিতকরণ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মান মূল্যায়নের দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে।
এছাড়া কমিশন ফোন, গাড়ি ও মোবাইল-সংক্রান্ত সুবিধা, নগদ ও রেশন ভাতা যৌক্তিকীকরণ এবং বেতনের গ্রেড ও ইনক্রিমেন্টে বিদ্যমান অসংগতি দূরীকরণের দিকেও সুপারিশ করবে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা ইতোমধ্যেই পুরোদমে কাজ শুরু করেছি। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।”
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত বেতন কাঠামো নির্ধারণের নির্দেশ দেন। তিনি বিশেষভাবে কর্মকর্তাদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “শুধু বেতন বাড়ালেই হবে না। অনেক সময় একটি অসুখেই মানুষ নিঃস্ব হয়ে যায়। স্বাস্থ্যবীমা থাকলে পরিবার নিশ্চিন্তে থাকতে পারে। প্রতিবেশী দেশগুলোতেও এ ধরনের মডেল চালু রয়েছে।”
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান।