০২:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও অধিকারের জন্য সম্প্রদায়ের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা

  • নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ১১:১৫:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫৬

 ছায়েদ আহামেদ :  হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের মতো বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলগুলি গুরুতর জলবায়ু ঝুঁকি এবং অন্যায্য সম্পদ ব্যবস্থাপনার সম্মুখীন। প্রাকৃতিক সম্পদ ও বন ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সম্প্রদায়ের ভূমিকা নিয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করেছে অক্সফাম বাংলাদেশ। সোমবার(১৭ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকে ঢাকার লেকশোর হোটেলের ইকেবানা কনফারেন্স রুমে নিঝুম দ্বীপের কমিউনিটি, স্টেকহোল্ডার ,আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অক্সফ্যামের প্রতিনিধি, বনবিভাগের কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

  কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের আলোচনায় উঠে আসে  বৈশ্বিক দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনে কমিউনিটির বিভিন্ন ভূমিকার কথা। নিঝুম দ্বীপের প্রান্তিক গোষ্ঠী যারা নাকি বৈশ্বিক দূষণে কিছুটা দায়ী থাকলেও জলবায়ু বিপর্যয় এবং কঠোর সংস্থান বিধিতে সবচেয়ে বেশি ভোগে তারা। প্রাকৃতিক সম্পদ তথা নিঝুম দ্বীপের সম্পদে তাদের তেমন একটা অধিকার থাকেনা। এতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যের আরো সংকটময় পর্যায়ে পৌঁছে।  আলোচকরা আরো বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিঝুম দ্বীপের জাতীয় উদ্যান তথা বনায়ন যেমন রক্ষা করতে হবে তেমনি সেখানকার বাসিন্দাদেরও টিকিয়ে রাখতে হবে।  বন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কমিউনিটি স্টুয়ার্ডশীপ এর ভূমিকা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, বাসিন্দাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিভিন্ন প্রণোদনমূলক কাজের মাধ্যমে ও সচেতনতা বৃদ্ধি করে তাদের দ্বারাই পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষা করতে হবে।  

এছাড়া, হাতিয়ার সুখচর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড- ঢালচরে মনপুরার নাজিমুদ্দিন চৌধুরী(সাবেক সচিব) পরিবারের দখলদারিত্বের অবসান ঘটিয়ে কিছু নদী ভাঙ্গা বাসিন্দাদের আশ্রয়স্থান করে দিতে পারলে নিঝুম দ্বীপের ওপর চাপ কমবে বলেও সুপারিশ আকারে উঠে আসে বক্তাদের আলোচনায়। পাশাপাশি নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যান এলাকায় বনবিভাগের নামীয় চর সমূহকে ভূমি বিভাগ ভিন্ন ভিন্ন নাম দিয়ে ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়ায় সাংঘর্ষিক আবহ তৈরি করে। যেখানে জোতদার’রা নামে বেনামে বন্দোবস্ত নিয়ে বন উজাড় করে হরিণসহ বাস্তুতন্ত্রকে বিলুপ্তির দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন বক্তারা। 

আলোচকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বনবিদ্যা ও পরিবেশ বিজ্ঞাণের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিমুদ্দিন, বন সংরক্ষক ড. মোল্লা রেজাউল করিম, হাতিয়া দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম,অক্সফাম বাংলাদেশের প্রোগ্রাম কোর্ডিনেটর শান্তা সোহেলি ময়না, উপকূলীয় বনবিভাগ নোয়াখালী জেলা বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ, গণমাধ্যম কর্মী ছায়েদ আহামেদ, কমিউনিটি লিডারশীপের নাছিমা খনম প্রমুখ। 

এর আগে, অক্সফাম এর বাংলাদেশ জলবায়ু বিচার ও প্রাকৃতিক সম্পদ অধিকারের প্রধান মোহাম্মদ এমরান হাসান তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অক্সফাম স্বাধীনতাউত্তর সময় ধরে অক্সফাম বাংলাদেশের পরিবেশ-প্রতিবেশ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কাজ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অক্সফাম সরকার ও অন্যান্য উন্নয়ন সংগঠনের সাথে যৌথভাবে দরিদ্র নারী, পুরুষ ও বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর জলবায়ু পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় অভিযোজন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক উন্নতি, কৃষি সেবা ও সম্পদে দরিদ্র মানুষের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিতকরণসহ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় কাজ করে।  CACS প্রকল্প বাস্তুতন্ত্রকে শক্তিশালী করে এবং সম্পদ পরিচালনা এবং তাদের অধিকার দাবি করার জন্য সম্প্রদায়কে ক্ষমতায়নের মাধ্যমে জলবায়ু অভিযোজন উন্নত করতে কাজ করে বলেও জানান অক্সফামের এ কর্মকর্তা।  এতে সঞ্চালনায় ছিলেন, অক্সফ্যাম ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের(CACS)প্রোজেক্টের মো: তাজবিব রহমান। 

সর্বাধিক পঠিত

বেগমগঞ্জ উপজেলা হাসপাতাল থেকে শিশু চুরি

প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও অধিকারের জন্য সম্প্রদায়ের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা

আপডেট: ১১:১৫:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 ছায়েদ আহামেদ :  হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের মতো বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলগুলি গুরুতর জলবায়ু ঝুঁকি এবং অন্যায্য সম্পদ ব্যবস্থাপনার সম্মুখীন। প্রাকৃতিক সম্পদ ও বন ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সম্প্রদায়ের ভূমিকা নিয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করেছে অক্সফাম বাংলাদেশ। সোমবার(১৭ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকে ঢাকার লেকশোর হোটেলের ইকেবানা কনফারেন্স রুমে নিঝুম দ্বীপের কমিউনিটি, স্টেকহোল্ডার ,আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অক্সফ্যামের প্রতিনিধি, বনবিভাগের কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

  কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের আলোচনায় উঠে আসে  বৈশ্বিক দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনে কমিউনিটির বিভিন্ন ভূমিকার কথা। নিঝুম দ্বীপের প্রান্তিক গোষ্ঠী যারা নাকি বৈশ্বিক দূষণে কিছুটা দায়ী থাকলেও জলবায়ু বিপর্যয় এবং কঠোর সংস্থান বিধিতে সবচেয়ে বেশি ভোগে তারা। প্রাকৃতিক সম্পদ তথা নিঝুম দ্বীপের সম্পদে তাদের তেমন একটা অধিকার থাকেনা। এতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যের আরো সংকটময় পর্যায়ে পৌঁছে।  আলোচকরা আরো বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিঝুম দ্বীপের জাতীয় উদ্যান তথা বনায়ন যেমন রক্ষা করতে হবে তেমনি সেখানকার বাসিন্দাদেরও টিকিয়ে রাখতে হবে।  বন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কমিউনিটি স্টুয়ার্ডশীপ এর ভূমিকা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, বাসিন্দাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিভিন্ন প্রণোদনমূলক কাজের মাধ্যমে ও সচেতনতা বৃদ্ধি করে তাদের দ্বারাই পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষা করতে হবে।  

এছাড়া, হাতিয়ার সুখচর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড- ঢালচরে মনপুরার নাজিমুদ্দিন চৌধুরী(সাবেক সচিব) পরিবারের দখলদারিত্বের অবসান ঘটিয়ে কিছু নদী ভাঙ্গা বাসিন্দাদের আশ্রয়স্থান করে দিতে পারলে নিঝুম দ্বীপের ওপর চাপ কমবে বলেও সুপারিশ আকারে উঠে আসে বক্তাদের আলোচনায়। পাশাপাশি নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যান এলাকায় বনবিভাগের নামীয় চর সমূহকে ভূমি বিভাগ ভিন্ন ভিন্ন নাম দিয়ে ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়ায় সাংঘর্ষিক আবহ তৈরি করে। যেখানে জোতদার’রা নামে বেনামে বন্দোবস্ত নিয়ে বন উজাড় করে হরিণসহ বাস্তুতন্ত্রকে বিলুপ্তির দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন বক্তারা। 

আলোচকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বনবিদ্যা ও পরিবেশ বিজ্ঞাণের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিমুদ্দিন, বন সংরক্ষক ড. মোল্লা রেজাউল করিম, হাতিয়া দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম,অক্সফাম বাংলাদেশের প্রোগ্রাম কোর্ডিনেটর শান্তা সোহেলি ময়না, উপকূলীয় বনবিভাগ নোয়াখালী জেলা বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ, গণমাধ্যম কর্মী ছায়েদ আহামেদ, কমিউনিটি লিডারশীপের নাছিমা খনম প্রমুখ। 

এর আগে, অক্সফাম এর বাংলাদেশ জলবায়ু বিচার ও প্রাকৃতিক সম্পদ অধিকারের প্রধান মোহাম্মদ এমরান হাসান তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অক্সফাম স্বাধীনতাউত্তর সময় ধরে অক্সফাম বাংলাদেশের পরিবেশ-প্রতিবেশ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কাজ করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অক্সফাম সরকার ও অন্যান্য উন্নয়ন সংগঠনের সাথে যৌথভাবে দরিদ্র নারী, পুরুষ ও বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর জলবায়ু পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় অভিযোজন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক উন্নতি, কৃষি সেবা ও সম্পদে দরিদ্র মানুষের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিতকরণসহ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় কাজ করে।  CACS প্রকল্প বাস্তুতন্ত্রকে শক্তিশালী করে এবং সম্পদ পরিচালনা এবং তাদের অধিকার দাবি করার জন্য সম্প্রদায়কে ক্ষমতায়নের মাধ্যমে জলবায়ু অভিযোজন উন্নত করতে কাজ করে বলেও জানান অক্সফামের এ কর্মকর্তা।  এতে সঞ্চালনায় ছিলেন, অক্সফ্যাম ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের(CACS)প্রোজেক্টের মো: তাজবিব রহমান।